ভুত বাংলা সফর (পুরুলিয়া পশ্চিম)
দূরে নীল ছোট ছোট পাহাড়ের সারি। শুষ্ক লালমাটিতে ইতিউতি গাছের ছায়া। অপূর্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে নির্জন শান্ত সুন্দর এই রেলস্টেশন মন ভরিয়ে দেয়। কিন্তু পুরুলিয়ার অতি অখ্যাত এই স্টেশনটি বার বার উঠে এসেছে খবরের শিরোনামে। কারণ? একটানা ৪২ বছর ধরে এই স্টেশন বন্ধ ছিল ভূতের ভয়ে। হ্যা ঠিকই শুনেছেন ভুতের ভয়ে।
সে একটা সময় ছিল যখন বেশ বড়সড় স্টেশন হিসেবে পুরুলিয়ায় যথেষ্ট নাম-ডাক ছিল এই স্টেশনের। নিয়মিত থামত প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ছিল স্টেশন-লাগোয়া কর্মীদের কোয়ার্টার। বসত বাজার-হাটও! বছর পঞ্চাশ আগে হঠাতই ছবিটা বদলে যায়। শোনা যায়, ওই স্টেশনের পাশে একটি মৃত শিশু কে সমাধিস্থ করা হয়ে ছিল। তার পর থেকেই ধীরে ধীরে ভৌতিক উপদ্রব গ্রাস করে এই এলাকাকে। রাত নামলে হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায় অদ্ভুত আলো। রাত যত বাড়ে, বাতাসে ভেসে আসে অদ্ভুত গন্ধ। শোনা যায় অশরীরী কণ্ঠস্বর। শুধুই রাতের অন্ধকারে নয়! দিনেও এই এলাকা ভৌতিক! দিনের বেলাতেও নাকি অনেকেই কানের কাছে মানুষের গলা শুনে চমকে উঠেছেন। চার পাশে তাকিয়ে কিন্তু দেখা যায়নি কাউকে। অনেক সময়ে আবার কারোর গা ঘেঁষে চলে গিয়েছে অশরীরী কেউ! ধাক্কা খেয়ে সচেতন হয়েছেন সবাই, কিন্তু কারও দেখা মেলেনি!
তার পর থেকেই ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত ভুতুড়ে স্টেশনে পরিণত হয় জমজমাট এলাকা। পালিয়ে যান রেলকর্মীরা। বন্ধ হয়ে যায় স্টেশনে ট্রেন থামা। ১৯৬৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এমনই দশা চলে। তার পর, তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ২০০৯ সালে ফের শুরু হয় ট্রেন চলা। পুরনো স্টেশন-বাড়িটাকেই রং করে খুলে দেওয়া হয়। শুধু প্যাসেঞ্জার হল্ট হিসেবে! আজও সন্ধে হলেই শুনশান হয়ে যায় স্টেশন, থামে না ট্রেন, চলে যান রেল কর্মীরাও।
এই স্টেশনের ছবি খুব একটা বদলায়নি। ফের মানুষের পা পড়লেও ভুতুড়ে স্টেশনের সেই মর্যাদা এতটুকু ক্ষুণ্ণ হয়নি। ভুত দেখার ইচ্ছে থাকলে তাই আপনিও পা বাড়াতেই পারেন আমাদের সঙ্গে।
এই গা ছমছমে অনুভুতির পাশাপাশি থাকছে অপূর্ব সুন্দর প্রকৃতির সংস্পর্শে আসার সুযোগও। কাছেই রয়েছে মুরগুমা ড্যাম, পাহাড়ের কোলে শান্ত এই জলাশয় পর্যটকদের মুগ্ধ করে তাঁর অপার সৌন্দর্যের জন্য। যেতে পারেন দেউলঘাটা, পাথুরে নদীর ধারে একাধিক প্রাচীন মন্দির তাদের নির্মাণ শৈলীর গুণে আজও সমান আকর্ষণীয়। ভারি চমৎকার জায়গা দেউলঘাটা।
দুদিন অথবা তিন দিনের প্যাকেজ (থাকা খাওয়া ঘোরা সহ)
খরচ আলোচনা সাপেক্ষ
বিদ্রঃ
- টোল ট্যাক্স, পারকিং ফি, প্রবেশ মূল্য আলাদা।
- দুর্যোগ বা দুর্ঘটনার কারনে সফর সূচির পরিবর্তন হতে পারে।
- সফরের জনসংখ্যা বাড়লে বা কমে গেলে মূল্যের তারতম্য হতে পারে।